একজন উদ্যোক্তাকে প্রশ্ন করা হলো, আপনি এ
পথ মাড়ালেন কেন?
উদ্যোক্তার উত্তর, ‘আমার শেষ বসের কথা এটি।’
তাঁকে আবার জিজ্ঞাসা করা হলো, তিনি কী বলেছিলেন?
উত্তর পাওয়া গেল, ‘তোমাকে চাকরিচ্যুত করা হলো।’
উদ্যোক্তাদের মধ্যে কৌতুকটি বেশ প্রচলিত। কেউ চাকরিচ্যুত তো কেউ বিশ্ববিদ্যালয়চ্যুত—উদ্যোক্তারা কেমন যেন একটু লাইনচ্যুত। কিছুটা ভিন্নধারা যেন তাঁদের রক্তের মধ্যেই মিশে আছে। এই ভিন্নধারাটা কী? এর উত্তর তো সফল উদ্যোক্তারাই ভালো দিতে পারবেন। সম্প্রতি বিবিসির প্রশ্নের মুখোমুখি হয়েছিলেন প্রযুক্তিতে সফল পাঁচ উদ্যোগের প্রধান নির্বাহী। যাঁরা একই সঙ্গে প্রতিষ্ঠানগুলোর সহপ্রতিষ্ঠাতাও বটে। তাঁরা উত্তর দিয়েছেন নতুন ব্যবসায় উদ্যোগে (স্টার্টআপ) সফলতার মূলমন্ত্র নিয়ে।
নতুন করে শুরু করার সুযোগ রাখুন
জিমি ওয়েলস (সহপ্রতিষ্ঠাতা, উইকিপিডিয়া)
ব্যর্থ হলে দ্রুত হও, বারবার হও এবং ভালোভাবেই হও—প্রচলিত ধারার বাইরের এই উপদেশ উদ্যোক্তাদের কাছ থেকে শোনা যায় প্রায়ই। ইন্টারনেটভিত্তিক মুক্ত বিশ্বকোষ উইকিপিডিয়ার সহপ্রতিষ্ঠাতা জিমি ওয়েলসও সে কথা মানেন মনেপ্রাণেই। শুরুর দিনগুলোর কথা মনে করে তিনি বলেন, ‘উইকিপিডিয়ার প্রথম সংস্করণের নাম ছিল নিউপিডিয়া। এর গঠনটা ছিল বেশ জটিল। কিন্তু আমি ব্যর্থ হতে চাইনি।’ না চাইলেও ব্যর্থতার স্বাদ থেকে ‘বঞ্চিত’ হননি তিনি। উইকিপিডিয়ার আগে তাঁর বেশকিছু উদ্যোগ আলোর মুখ দেখেনি। সব সম্পদ নিয়ে কোনো একক কাজে ঝাঁপিয়ে পড়ার ঠিক পক্ষপাতী নন জিমি ওয়েলস।
তাঁর উপদেশ, ‘সব টাকা এক ব্যবসায়ে বিনিয়োগ করবেন না। নতুন করে শুরু করার একটা সুযোগ রাখুন নিজের জন্য।’
সমালোচনায় কান দেবেন না
নিকোলাস ব্রুসন (সহপ্রতিষ্ঠাতা, ব্লা ব্লা কার)
জিমি ওয়েলস মাঝেমধ্যে আফসোস করেন, সবার মন্তব্য আগে শুনে সে অনুযায়ী যদি ব্যবস্থা নিতাম! তবে আরেক প্রধান নির্বাহী সমালোচনায় কান না দিতে উৎসাহ দেন উদ্যোক্তাদের। তিনি নিকোলাস ব্রুসন, ব্লা ব্লা কারের প্রধান নির্বাহী। ফ্রান্সের অন্যতম সফল এই প্রতিষ্ঠানের ১৯টি দেশে দুই কোটির বেশি সদস্য আছে।
নিকোলাস বলেন, ‘এমন অনেক বিনিয়োগকারী আপনি পাবেন, যারা আপনাকে বাজারের কথা মাথায় রাখতে বলবে। অথচ আপনি যদি নতুন কিছু শুরু করে থাকেন তো এটা পরিষ্কার যে বাজারটা এখনো তৈরি হয়নি। তৈরির কাজটা করতে হবে আপনাকেই।’ মনে করুন নিজের গাড়িতে চড়ে কোথাও যাচ্ছেন। গাড়িতে হয়তো দুটি আসন ফাঁকা আছে। চাইলেই ব্লা ব্লা কারের মাধ্যমে এই দুটি সিটের জন্য যাত্রাসঙ্গী খুঁজে নিয়ে কামিয়ে ফেলতে পারেন কিছু অতিরিক্ত টাকা। ২০০৩ সালের দিকে এমন অদ্ভুত ধারণার জন্য মানুষের সমালোচনায় কান দিলে কি আজ ব্লা ব্লা কার প্রতিষ্ঠিত হতো?
সৃজনশীলতা আর সততাই সবকিছু
ইয়ান্সি স্ট্রিকলার (প্রধান নির্বাহী, কিকস্টার্টার)
ক্রাউডফান্ডিং ওয়েবসাইট কিকস্টার্টারের সহপ্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী ইয়ান্সি স্ট্রিকলারের কাছে সৃজনশীলতা এবং সততাই মূলকথা। তিনি বলেন, ‘এমন কোনো সমাধান দাও যা নিয়ে তুমি নিজেই গর্ববোধ করতে পারো। এমন কিছু যা তোমার কাছে নৈতিকভাবে ঠিক মনে হয়।’ এ ধরনের মতবাদ অবশ্য অনেক ইন্টারনেটভিত্তিক প্রতিষ্ঠানেরই লক্ষ্য।
সময় দিতে হবে নিজেকে
মাইক ক্রিগার (সহপ্রতিষ্ঠাতা, ইনস্টাগ্রাম)
সিলিকন ভ্যালির স্টার্টআপগুলোর কথা ভাবতেই কেন জানি হুডি পরা, পিৎজা খাওয়া একদল তরুণ মেধাবীর কথা মাথায় আসে। অগোছালো টেবিল, অগোছালো ঘর, কাজ করছে তো করছেই, দিনরাতের হিসাব নেই, এমন। তবে ইনস্টাগ্রামের প্রধান নির্বাহী মাইক ক্রিগার শোনালেন ভিন্ন কথা। শুরুর দিনগুলোতে নিজেদের ওপর বড্ড অত্যাচার করেছেন বলেই মন্তব্য করলেন। তিনি বললেন, ‘আপনি হয়তো দিনে ১২ থেকে ১৪ ঘণ্টা কাজ করা শুরু করলেন। তবে ওই অতিরিক্ত দুই ঘণ্টায় কাজের ফলাফল হয়তো ঋণাত্মকে দাঁড়াবে।’ সময় দিতে হবে নিজেকে। একদম নিজের জন্য, নিজের মতো করে কাটানোর জন্য কিছু সময় রাখতে হবে। এটা দক্ষতা বাড়াবে বৈ কমাবে না। বললেন মাইক। সহপ্রতিষ্ঠাতা নির্বাচনের ক্ষেত্রে একটু খুঁতখুঁতে স্বভাবের হওয়ায় ভালো বলে মনে করেন সিলিকন ভ্যালির এই প্রধান নির্বাহী।
খুঁজে বের করতে হবে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ
শন র্যা ড (প্রতিষ্ঠাতা, টিন্ডার)
টিন্ডারের প্রতিষ্ঠাতা শন র্যা ড হয়তো মাইক ক্রিগারের সঙ্গে একমত পোষণ করেন না। কারণ, তিনি সহপ্রতিষ্ঠাতার খোঁজে নামেননি। এই ডেটিং অ্যাপের শুরুটা তাঁর একার হাতেই। তিনি মনে করেন, ‘কাজ মাঝেমধ্যে বিরক্তিকর হতে পারে।’ আর তাই তিনি নিজের জন্য কিছু নিয়ম তৈরি করে নিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘৮০ শতাংশ ফলাফল পেতে এক জীবনে সম্পন্ন করার জন্য তিনটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় খুঁজে বের করতে হবে।’
উদ্যোক্তার উত্তর, ‘আমার শেষ বসের কথা এটি।’
তাঁকে আবার জিজ্ঞাসা করা হলো, তিনি কী বলেছিলেন?
উত্তর পাওয়া গেল, ‘তোমাকে চাকরিচ্যুত করা হলো।’
উদ্যোক্তাদের মধ্যে কৌতুকটি বেশ প্রচলিত। কেউ চাকরিচ্যুত তো কেউ বিশ্ববিদ্যালয়চ্যুত—উদ্যোক্তারা কেমন যেন একটু লাইনচ্যুত। কিছুটা ভিন্নধারা যেন তাঁদের রক্তের মধ্যেই মিশে আছে। এই ভিন্নধারাটা কী? এর উত্তর তো সফল উদ্যোক্তারাই ভালো দিতে পারবেন। সম্প্রতি বিবিসির প্রশ্নের মুখোমুখি হয়েছিলেন প্রযুক্তিতে সফল পাঁচ উদ্যোগের প্রধান নির্বাহী। যাঁরা একই সঙ্গে প্রতিষ্ঠানগুলোর সহপ্রতিষ্ঠাতাও বটে। তাঁরা উত্তর দিয়েছেন নতুন ব্যবসায় উদ্যোগে (স্টার্টআপ) সফলতার মূলমন্ত্র নিয়ে।
নতুন করে শুরু করার সুযোগ রাখুন
জিমি ওয়েলস (সহপ্রতিষ্ঠাতা, উইকিপিডিয়া)
ব্যর্থ হলে দ্রুত হও, বারবার হও এবং ভালোভাবেই হও—প্রচলিত ধারার বাইরের এই উপদেশ উদ্যোক্তাদের কাছ থেকে শোনা যায় প্রায়ই। ইন্টারনেটভিত্তিক মুক্ত বিশ্বকোষ উইকিপিডিয়ার সহপ্রতিষ্ঠাতা জিমি ওয়েলসও সে কথা মানেন মনেপ্রাণেই। শুরুর দিনগুলোর কথা মনে করে তিনি বলেন, ‘উইকিপিডিয়ার প্রথম সংস্করণের নাম ছিল নিউপিডিয়া। এর গঠনটা ছিল বেশ জটিল। কিন্তু আমি ব্যর্থ হতে চাইনি।’ না চাইলেও ব্যর্থতার স্বাদ থেকে ‘বঞ্চিত’ হননি তিনি। উইকিপিডিয়ার আগে তাঁর বেশকিছু উদ্যোগ আলোর মুখ দেখেনি। সব সম্পদ নিয়ে কোনো একক কাজে ঝাঁপিয়ে পড়ার ঠিক পক্ষপাতী নন জিমি ওয়েলস।
তাঁর উপদেশ, ‘সব টাকা এক ব্যবসায়ে বিনিয়োগ করবেন না। নতুন করে শুরু করার একটা সুযোগ রাখুন নিজের জন্য।’
সমালোচনায় কান দেবেন না
নিকোলাস ব্রুসন (সহপ্রতিষ্ঠাতা, ব্লা ব্লা কার)
জিমি ওয়েলস মাঝেমধ্যে আফসোস করেন, সবার মন্তব্য আগে শুনে সে অনুযায়ী যদি ব্যবস্থা নিতাম! তবে আরেক প্রধান নির্বাহী সমালোচনায় কান না দিতে উৎসাহ দেন উদ্যোক্তাদের। তিনি নিকোলাস ব্রুসন, ব্লা ব্লা কারের প্রধান নির্বাহী। ফ্রান্সের অন্যতম সফল এই প্রতিষ্ঠানের ১৯টি দেশে দুই কোটির বেশি সদস্য আছে।
নিকোলাস বলেন, ‘এমন অনেক বিনিয়োগকারী আপনি পাবেন, যারা আপনাকে বাজারের কথা মাথায় রাখতে বলবে। অথচ আপনি যদি নতুন কিছু শুরু করে থাকেন তো এটা পরিষ্কার যে বাজারটা এখনো তৈরি হয়নি। তৈরির কাজটা করতে হবে আপনাকেই।’ মনে করুন নিজের গাড়িতে চড়ে কোথাও যাচ্ছেন। গাড়িতে হয়তো দুটি আসন ফাঁকা আছে। চাইলেই ব্লা ব্লা কারের মাধ্যমে এই দুটি সিটের জন্য যাত্রাসঙ্গী খুঁজে নিয়ে কামিয়ে ফেলতে পারেন কিছু অতিরিক্ত টাকা। ২০০৩ সালের দিকে এমন অদ্ভুত ধারণার জন্য মানুষের সমালোচনায় কান দিলে কি আজ ব্লা ব্লা কার প্রতিষ্ঠিত হতো?
সৃজনশীলতা আর সততাই সবকিছু
ইয়ান্সি স্ট্রিকলার (প্রধান নির্বাহী, কিকস্টার্টার)
ক্রাউডফান্ডিং ওয়েবসাইট কিকস্টার্টারের সহপ্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী ইয়ান্সি স্ট্রিকলারের কাছে সৃজনশীলতা এবং সততাই মূলকথা। তিনি বলেন, ‘এমন কোনো সমাধান দাও যা নিয়ে তুমি নিজেই গর্ববোধ করতে পারো। এমন কিছু যা তোমার কাছে নৈতিকভাবে ঠিক মনে হয়।’ এ ধরনের মতবাদ অবশ্য অনেক ইন্টারনেটভিত্তিক প্রতিষ্ঠানেরই লক্ষ্য।
সময় দিতে হবে নিজেকে
মাইক ক্রিগার (সহপ্রতিষ্ঠাতা, ইনস্টাগ্রাম)
সিলিকন ভ্যালির স্টার্টআপগুলোর কথা ভাবতেই কেন জানি হুডি পরা, পিৎজা খাওয়া একদল তরুণ মেধাবীর কথা মাথায় আসে। অগোছালো টেবিল, অগোছালো ঘর, কাজ করছে তো করছেই, দিনরাতের হিসাব নেই, এমন। তবে ইনস্টাগ্রামের প্রধান নির্বাহী মাইক ক্রিগার শোনালেন ভিন্ন কথা। শুরুর দিনগুলোতে নিজেদের ওপর বড্ড অত্যাচার করেছেন বলেই মন্তব্য করলেন। তিনি বললেন, ‘আপনি হয়তো দিনে ১২ থেকে ১৪ ঘণ্টা কাজ করা শুরু করলেন। তবে ওই অতিরিক্ত দুই ঘণ্টায় কাজের ফলাফল হয়তো ঋণাত্মকে দাঁড়াবে।’ সময় দিতে হবে নিজেকে। একদম নিজের জন্য, নিজের মতো করে কাটানোর জন্য কিছু সময় রাখতে হবে। এটা দক্ষতা বাড়াবে বৈ কমাবে না। বললেন মাইক। সহপ্রতিষ্ঠাতা নির্বাচনের ক্ষেত্রে একটু খুঁতখুঁতে স্বভাবের হওয়ায় ভালো বলে মনে করেন সিলিকন ভ্যালির এই প্রধান নির্বাহী।
খুঁজে বের করতে হবে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ
শন র্যা ড (প্রতিষ্ঠাতা, টিন্ডার)
টিন্ডারের প্রতিষ্ঠাতা শন র্যা ড হয়তো মাইক ক্রিগারের সঙ্গে একমত পোষণ করেন না। কারণ, তিনি সহপ্রতিষ্ঠাতার খোঁজে নামেননি। এই ডেটিং অ্যাপের শুরুটা তাঁর একার হাতেই। তিনি মনে করেন, ‘কাজ মাঝেমধ্যে বিরক্তিকর হতে পারে।’ আর তাই তিনি নিজের জন্য কিছু নিয়ম তৈরি করে নিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘৮০ শতাংশ ফলাফল পেতে এক জীবনে সম্পন্ন করার জন্য তিনটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় খুঁজে বের করতে হবে।’
ConversionConversion EmoticonEmoticon