ভিজ্যুয়াল বেসিকের ধারণাসমূহ

ভিজ্যুয়াল প্রোগ্রামিং

Visual শব্দটির অর্থ চাক্ষুষ বা সরাসরি দৃশ্যমান। Programming এর ভাষায় Visual মানে কোড না লিখে প্রোগ্রামের বিভিন্ন User Interface সমূহ প্রোগ্রামে সংযুক্ত করা। এক্ষেত্রে User Interface সমূহে সংযোজনের কাজ অনেকটা চিত্র আঁকার মতই। সুতরাং ভিজ্যুয়াল প্রোগ্রামিং একটি চিত্রভিত্তিক প্রোগ্রামিং মডেল যা Windows Operating System কর্তৃক সমর্থিত। মেনুচালিত প্রোগ্রাম রচনার ক্ষেত্রে এ মডেলটি খুবই উপযোগী।



মূলত ভিজ্যুয়াল প্রোগ্রামিং হচ্ছে এমন এক ধরনের উইন্ডোজ ভিত্তি Object Oriented Programming যাতে মেনু, চিত্র, বিভিন্ন ধরনের টুল বা কন্ট্রোল ব্যবহার করে বাস্তব ভিত্তিক যে কোন সমস্যা অতি সহজে সমাধান করা যায়।


বহুল প্রচলিত ভিজ্যুয়াল সফটওয়্যার সমূহঃ


ভিজ্যুয়াল বেসিক
ভিজ্যুয়াল ফক্সপ্রো
ভিজ্যুয়াল সি
ভিজ্যুয়াল সি++
ভিজ্যুয়াল জাভা
পাওয়ার বিল্ডার
ডেভেলপার ২০০০ ইত্যাদি।


ভিজ্যুয়াল প্রোগ্রামিং এর বৈশিষ্ট্যসমূহ


ভিজ্যুয়াল প্রোগ্রামিং এর ক্ষেত্রে ভিজ্যুয়াল ডেভেলপমেন্ট এনভায়রনমেন্ট ব্যবহার করে নতুন কোন এপ্লিকেশন ডেভেলপ করার পুরো প্রক্রিয়াটিই ভিজ্যুয়াল এবং গ্রাফিক্স প্রকৃতির।
ভিজ্যুয়াল প্রোগ্রামিং এর বেলায় GUI (Graphical User Interface) অপারেটিং সিস্টেম যেমন উইন্ডোজ ব্যবহৃত হয়।
Command এর পরিবর্তে Menu, Tools বা Control ব্যবহার করে সমস্যার সমাধান করা যায়। User গণ Command মুখস্থ না করে মাউসের মাধ্যমে ক্লিক করে যে কোন কার্য সম্পন্ন করতে পারে।
প্রয়োজনীয় যথেষ্ট সংখ্যক লাইব্রেরি ফাংশন, সাবরুটিন, কাস্টম লাইব্রেরি ও কাস্টম অবজেক্ট তৈরির সুবিধা বিদ্যমান থাকায় স্বল্প সময়ে প্রোগ্রাম রচনা করা যায়।
এডিটিং এর বেলায় কোড এর পরিবর্তে শক্তিশালী কন্ট্রোল ব্যবহার করে মাউস ক্লিক এর মাধ্যমে নিজের ইচ্ছামত ডিজাইন করে ফলাফল পাওয়া যায়।
ভিজ্যুয়াল প্রোগ্রামিং এর অসাধারণ ডিবাগিং পদ্ধতি বিদ্যমান। ফলে সহজে ও অল্প সময়ে প্রোগ্রামের ভুল-ত্রুটি সনাক্তকরণ ও সংশোধন করা যায়।
সর্বোপরি ভিজ্যুয়াল প্রোগ্রামিং এ ব্যবহৃত অবজেক্টসমূহ বাস্তব জীবনের সাথে সম্পর্কিত বিধায় এটি ইউজার ফ্রেন্ডলি।


ভিজ্যুয়াল প্রোগ্রামিং এর ব্যবহারিক ক্ষেত্রসমূহ



ভিজ্যুয়াল প্রোগ্রামিং আজ সর্বজন স্বীকৃত। কম্পিউটার সিস্টেমে এমন কোন ক্ষেত্র নেই যেখানে ভিজ্যুয়াল প্রোগ্রামিং এর ব্যবহার নেই। নিম্নে ভিজ্যুয়াল প্রোগ্রামিং এর ব্যবহারিক ক্ষেত্রসমূহ উল্লেখ করা হল। যথাঃ
রিয়েল টাইম সিস্টেম ডিজাইনের ক্ষেত্রে
সিমুলেশন ও মডেলিং সিস্টেমে
অবজেক্ট অরিয়েন্টেড ডাটাবেজ সমূহে
হাইপার টেক্সট, হাইপার মিডিয়া ও এক্সপার্ট টেক্সট সিস্টেমে
আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স ও এক্সপোর্ট সিস্টেমে
নিউরাল নেটওয়ার্কস ও প্যারালাল প্রোগ্রামিং ও কম্পাইলার ডিজাইন
কমিউনিকেশন সিস্টেম ডিজাইন
ডিস্টিবিউটেড সিস্টেম ডিজাইন
ডিসিশন সাপোর্ট ও অফিস অটোমেশন সিস্টেম
সিম, ক্যাম, ক্যাড ইত্যাদি সিস্টেমে এবং সফটওয়্যার ইন্ডাস্ট্রিতে সফটওয়্যার ডিজাইন ও এনালাইসিস প্রভৃতি ক্ষেত্রে।


ভিজ্যুয়াল প্রোগ্রামিং এর প্রয়োজনীয়তা



তথ্য প্রযুক্তির এ যুগে স্কুল পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের কম্পিউটার গেম থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ স্তরে পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও গবেষণাধর্মী কার্যক্রম পর্যন্ত সকল শ্রেণীর ইউজারদের চাহিদা মেটাতে ভিজ্যুয়াল প্রোগ্রামিং এর কার্যকারিত ও প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য। কার্যকর ও নতুন নতুন বৈশিষ্ট্যের জন্য ভিজ্যুয়্যাল প্রোগ্রামিং এর চাহিদা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং বর্তমানে এটি সবচেয়ে জনপ্রিয় প্রোগ্রামিং পদ্ধতি হিসেবে সর্বজন স্বীকৃত। সাধারণ ব্যবহারকারীগণ টেক্সট প্রোগ্রামিং এ কাজ করে অভ্যস্থ নন। তাদের পক্ষে হাজার হাজার কমান্ড মুখস্থ করে সুনির্দিষ্ট নিয়মনীতি মেনে চলে প্রোগ্রাম কোডিং করা কষ্টসাধ্য ব্যাপার। তাছাড়া প্রোগ্রামের ভুল-ত্রুটি নির্ণয় ও সংশোধন করাও অনেক কষ্টসাধ্য। কিন্তু ভিজ্যুয়াল প্রোগ্রামিং এর ক্ষেত্রে শক্তিশালী কন্ট্রোল ব্যবহার করে কোড না লিখে, হাজার হাজার কমান্ড মুখস্ত না করে মাউস ব্যবহার করে অতি সহজে নিজের ইচ্ছামত ডিজাইন করে প্রোগ্রাম করা যায়। তাছাড়া ভিজ্যুয়াল প্রোগ্রামিং এর কার্যক্রম সঠিকভাবে সম্পন্ন করার জন্য নিজস্ব বিল্ট ইন ফাংশন, সাবরুটিন ও কাস্টম লাইব্রেরীর সুবিধা বিদ্যমান। টেক্সট প্রোগ্রামিং অপেক্ষা ভিজ্যুয়াল প্রোগ্রামিং এ অনেক সুবিধা বিদ্যমান। ভিজ্যুয়াল প্রোগ্রামিং এর প্রয়োজনীয়তা যথেষ্ট এবং তা দিন দিন পর্যায়ক্রমে বৃদ্ধি পাচ্ছে।

Comments

Popular posts from this blog

উদ্যোক্তাদের জন্য ৫টি উপদেশ ৫টি প্রতিষ্টান প্রধানের পক্ষ থেকে

স্মার্টফোনের অতি ব্যবহার কিশোরদের অমনোযোগী করে

সবার চোখের আড়াল হতে আপনার ফেসবুক একাউন্ট হাইড করুন